

Discover more from পড়ুয়া
বনফুল লাইব্রেরি
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর সাহিত্য-জীবন শুরু হয় স্কুলের ছাত্র থাকার সময়েই। রুদ্র শুধু কবি তথা সাহিত্যিক ছিলেন না। সাহিত্য-জীবনের পাশাপাশি প্রবাহিত হয়েছে তাঁর সংস্কৃতি-জীবন। রুদ্র যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়েন, তখন তাঁর বয়স আট বছর। সে-সময় ইসমাঈল মেমোরিয়াল হাইস্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় কবিতা আবৃত্তি করে প্রথম স্থান অধিকার করেন। কিন্তু তাঁর বাবা ছিলেন ঐ স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি। তাই বাবা নিজের পুত্রকে প্রথম পুরস্কারটি না-দিয়ে অন্যকে দিলেন। এই বঞ্চনা শিশু-রুদ্রের মনে দারুণভাবে প্রভাব ফেলে। অবশ্য বাবা তাঁকে পুরস্কার বাবদ অনেক বই কিনে দেন। কিন্তু শিশু রুদ্র তা প্রত্যাখ্যান করেন।
বছর দুয়েক পরে রুদ্র ভর্তি হন মোংলার সেন্ট পলস হাইস্কুলে। সেখানে প্রতিটি আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় রুদ্র প্রথম স্থান অধিকার করেন। রুদ্রের বয়স যখন এগারোয় পড়েছে, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে পাঠ্যবইয়ের সমস্ত কবিতাই রুদ্রর মুখস্ত হয়ে যায়। সে-সময় বুদ্ধদেব বসুর কবিতার অনুকরণে একটি কবিতা রচনা করেন। সেই ১৯৬৬ সালে রুদ্রের কবিতা রচনার হাতেখড়ি। কবিতাটি অবশ্য আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। এরপর রুদ্র নিয়মিত কবিতা লিখতেন। কবিতার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা এবং নাটক করার দিকেও রুদ্ৰ ঝুঁকেছিলেন সেই কিশোর বয়সেই। কিন্তু খেলাধুলার প্রতি বাবার নিষেধাজ্ঞার কারণে রুদ্র আর খেলার দিকে মন দেন নি।
১৯৬৮ সালে রুদ্র তখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন, তখন মামাতো ভাইদের সঙ্গে নিয়ে নানির ট্রাংক থেকে কিছু টাকা চুরি করেন। সকলে বলেছিল সেই টাকা দিয়ে সিনেমা দেখতে যাবে। কিন্তু রুদ্রের সিদ্ধান্তে সেই টাকায় বেশকিছু বই কিনে একটি লাইবেরি গঠন করা হয়। এর নাম দেয়া হয় 'বনফুল লাইব্রেরি’।
লেখকের বানানরীতির পরিবর্তন করা হয়নি।