পড়ুয়া

Share this post

হাজার বই সঙ্গে রাখার গালগপ্প!

www.porua.net

Discover more from পড়ুয়া

বই নিয়ে পাঠকের আনন্দ-বেদনার স্মৃতিগুলো প্রকাশের তেমন সুযোগ থাকে না। পাঠকের বলা না হয়ে ওঠা সেইসব কথাগুলো প্রকাশের ভাবনা থেকে আমরা শুরু করছি পাঠকের জন্য "পড়ুয়া"।
Over 2,000 subscribers
Continue reading
Sign in

হাজার বই সঙ্গে রাখার গালগপ্প!

মূসা রেজা | এদিকে, বাংলা বই নামানর নতুন জায়গা বাড়ছে দিনে দিনে। এখনি এ সব জায়গায় সেখানে এতে বই আছে যে তার পুরাটাই এক মানব জীবনে পড়ে শেষ করা যাবে না! এদিকে এবারে এসেছে কিন্ডেল। নতুন বাংলা বইয়ের সম্ভারে

Apr 27, 2023
Share this post

হাজার বই সঙ্গে রাখার গালগপ্প!

www.porua.net
Share

‘অন্তত ৬০ হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল!’ এমন একটা কথা নাকি বলেছেন ফরাসি বীর নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।(অবশ্য, উইকি কোট ঘেঁটেও নেপোলিয়নের তেমন কোনও উক্তি বের করতে পারে নি। হতে পারে ভুল করেছি তাই তালাশে মিলেছে শূন্য।)

নেপোলিয়নের পক্ষে হয়ত সে যুগে ৬০ বই সঙ্গে রাখা সম্ভব ছিল। সাধারণ জনতো দূরের কথা সে যুগে অনেক ভালো মানের পাঠাগার বা গ্রন্থাগারের পক্ষেও এতো বই রাখা সম্ভব ছিল না। বই যোগাড় করলেই হবে না, সেগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ করতে হবে, দেখাশোনা করতে হবে। ‘উই আর ইঁদুরের দেখো কারবার/ যা পায় তাই কেটে করে ছারখার।’ কিশোর বয়সে এমন বাক্যের ভাব সম্প্রসারণ যারা করেছেন তারা জানেন, বইয়ের প্রধান শত্রুপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে কারা। পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ ছাড়াও বর্ষাদিনের স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়াও বইয়ের স্বাস্থ্যহানি ঘটায়। সে কথা জানেন বই প্রেমিক সবাই।

পড়ুয়া is a reader-supported publication. To receive new posts and support my work, consider becoming a free or paid subscriber.

আরও আছে। টানাটানির সংসারে বই কেনা, আর ভাড়াবাড়িতে বই নিয়ে জীবন কাটানোর ঝামেলায় যারা পড়েন নি তারা কখনও জানবেন না সে দু:সহ দোজখসম আজাবের কথা। প্রতিবার বাড়ি বদল মানেই হল- প্রিয় বইগুলোকে পুলিশি রিমান্ডে পাঠানর দশা! আর বই নিয়ে আপন স্ত্রীর সঙ্গে অহরহ ‘সুমিষ্ট সংলাপের’ জেরে আমাদের এক বান্ধব অহরহ বন্ধুমহলে কহেন,- ‘বই আর বউ একত্রে থাকতে পারে না।’

বই নিয়ে এমন ভোগান্তির দিন অনেকটাই গত হয়েছে। কাগজের না হয়ে যদি পুস্তকটা ডিজিটাল, পিডিএফ বা ইপাব যাই হোক না কেনও, হয়- তা হলে? না বহনে কোনও বাড়তি কষ্ট নেই। আর পঠনে- সেই যে কথায় কয়, শয়ন যত্রতত্র ভোজন হট্ট মন্দির… না না ভুল করলাম... ভোজন যত্রতত্র, শয়ন হট্ট মন্দির হলেও আপত্তি নেই। ৬০ হাজার না হলেও কয়েক শ’ বই আপনার সঙ্গে থাকতে পারে অহরহ। মোবাইলের স্মৃতিতে পুরে রাখতে পারেন এ সব বই। কিংবা ইন্টারনেটে ঘুরে ঘুরে পড়তে পারেন বই। ইন্টারনেট থেকে ইংরেজি বই নামানর একটা ভালো জায়গা Library Genesis। নিজেই এক দফা ঘুরে দেখে আসুন। আপনি যে বই খুঁজছেন তাকে বিখ্যাত বা জনপ্রিয় হতে হবে। এ দুই শর্তের একটি পুরা করলেই কাঙ্ক্ষিত বইয়ের খোঁজ মিলবে জেনেসিস পুস্তকাগারে। নামাতেও পারবেন।

এদিকে, বাংলা বই নামানর নতুন জায়গা বাড়ছে দিনে দিনে। এখনি এ সব জায়গায় সেখানে এতে বই আছে যে তার পুরাটাই এক মানব জীবনে পড়ে শেষ করা যাবে না! এদিকে এবারে এসেছে কিন্ডেল। নতুন বাংলা বইয়ের সম্ভারে ভরে উঠবে দুনিয়া! ‘তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে!’ অতএব ডিজিটাল গোকুলে বেড়ে ওঠা পুস্তকসম্ভার কি একদিন কাগজের বইকে বধ করবে! বই বধের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের উত্তরণ ঘটেছে। প্যাপিরাস থেকে গুটেনবার্গ পর্যন্ত ধারাবাহিকতাকে আমরা অগ্রগতি বলি। এবারে অগ্রগতির আরেক বিশাল লাফ দেয়া হয়েছে ডিজিটাল প্রকাশনীর মাধ্যমে! এখানেই ইতি নয়, সামনে আরও আছে!

বাংলায় অনেক সময়ই কেবল পড়া বলা হয় না। ‘পড়াশোনা’ বলারও চল আছে। মনে হয়, ভবিষ্যৎকালের দিকে চোখ ও কানকে খোলা রেখে এ শব্দগুচ্ছ তৈরি করা হয়েছিল। অর্থাৎ অডিওবুক বা শ্রবণকেতাবের বাড়বাড়ন্তের দিনের কথাও হয়ত দিব্য দৃষ্টিতে দেখতে পেয়েছিলেন বাংলাভাষার আদিকালের প্রাচীন পুরুষ বা নারীরা! জুলে ভার্নে যেমন বিজ্ঞানের অনেক উন্নয়নের কথাই আগাম বলে গেছেন তা বিজ্ঞান ভিত্তিক রূপকথা বা বিজ্ঞান-কল্পের কাহিনিজুড়ে। তেমনই কোনও সংকেত পোরা ছিল ‘পড়াশোনা’ শব্দগুচ্ছে। আর আজকের যুগে এসে সে সংকেত মোচন করতে পারছি আমরা। মাগনা অডিওবুক বা শ্রবণকেতাবের প্লাবন বয়ে চলেছে ইন্টারনেটে। চোখে পড়ছি কানে শুনছি কিংবা চোখকে ছুটি দিয়ে কানেই শুনছি। ‘আহা! কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে!’

বই পড়ে লাভ কি – মনেই থাকে না! – অতি পুরানা এ প্রশ্নের জবাবে দিব্যকান্তি সংসারত্যাগী জ্ঞানী এক দরবেশ তার মুরিদকে পুরানা জং ধরা লোহার ঝাঁঝরি হাতি ধরিয়ে দিলেন। আর দিলেন এক বদনা। তারপর কইলেন-‘যাও বাবা, পাশের নদীর থেকে ঝাঁঝরি দিয়ে পানি তুলে বদনাটা ভরে আনো। বদনা না ভরা পর্যন্ত ফিরবে না আস্তানায়।

দিনভর ব্যর্থ চেষ্টার পর হয়রান, পরিশ্রান্ত মুরিদ মরীয়া হয়ে ভাবছে কি করবে! তখনই সেখানে হাজির হলেন দরবেশ। স্মিত হেসে জানতে চাইলেন কাজের কাজ কি হল?

-‘সম্ভব না। পারি নাই। খালি বদনা খালিই রয়েছে!’

-‘জানি। সম্ভব না। কিন্তু ঝাঁঝরির দিকে তাকাও তো তার অবস্থা দেখো বাবাজি!’ দিনভর পানি তোলার চেষ্টায় ঝাঁঝরির জং ধুয়ে মুছে গেছে। চকচক করছে বস্তুটা। মুরিদ দেখল।

-‘এই হল বই পড়ার ফল!’ এবারে দরবেশ বললেন। -‘মনে না থাকুক মানে বদনা ভরতে না পার তাতে কি ঝাঁঝরির জং তো ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাচ্ছে! সুতরাং পড়। নিয়মিত পড়। আর এটাই হলও ‘ইকরা।’

ক্লান্ত কিন্তু উদ্দীপ্ত মুরিদকে নিয়ে আস্তানায় ফিরে এলেন দরবেশ।

পড়ুয়া is a reader-supported publication. To receive new posts and support my work, consider becoming a free or paid subscriber.

Share this post

হাজার বই সঙ্গে রাখার গালগপ্প!

www.porua.net
Share
Previous
Next
Comments
Top
New
Community

No posts

Ready for more?

© 2023 Riton Khan
Privacy ∙ Terms ∙ Collection notice
Start WritingGet the app
Substack is the home for great writing