জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪, উত্তরবঙ্গে। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র। কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ। প্রথম উপন্যাস দৌড় প্রকাশিত হয় দেশ পত্রিকায়, ১৯৭৫-এ। ১৯৮৪ সালে কালবেলা উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। ২০০৯ সালে বঙ্কিম পুরস্কার, কলিকাতায় নবকুমার উপন্যাসের জন্য। দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর একাধিক উপন্যাস, শেষতম আলোকরেখা। ছোটদের জন্য তাঁর সৃষ্ট গোয়েন্দা-চরিত্র অর্জুন জনপ্রিয়। তাঁর বহু লেখাই চলচ্চিত্রে-টেলিভিশনে রূপায়িত হয়েছে। প্রয়াণ, ৮ মে ২০২৩।
১৯৮৫ সালে বই হয়ে প্রথম সংস্করণটি বেরোয় ‘কালপুরুষ’-এর। তার পর প্রায় পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে চতুর্থ পর্ব ‘মৌষলকাল’ লেখায় হাত দেন সমরেশ মজুমদার। মৌষলকাল-এ উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পালাবদলের এক ঘাত-প্রতিঘাতময় সময়। সেখানে পরিণত অর্ক প্রতিবাদ-আবেগ-ভালবাসার এক স্বতঃস্ফূর্ত কণ্ঠস্বর।
সমরেশ মজুমদার কোনও দিন একটি ধরনে আটকে থাকেননি। তাঁর নিজের কথায়—‘আমি এক বিষয় নিয়ে কখনও দু’বার লিখিনি।’ তাঁর বিষয় হিসেবে সামাজিক, রাজনৈতিক, মানবিক, প্রেম, সম্পর্ক, রহস্য— বাদ পড়েনি কোনওটাই। তাঁর অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে বিশেষ ভাবে বলা যেতে পারে, ‘সাতকাহন’-এর কথা। সাতকাহন উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাহসী এবং প্রতিবাদী এক মেয়ে, দীপাবলি, যার নামের মধ্যেই নিহিত অন্ধকার দূর করার প্রতিশ্রুতি। দীপাকে সামনে রেখেই কাহিনির পটপরিবর্তনে বারবার উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে উত্তরবাংলার চা-বাগান, গাছগাছালি আর আংরাভাসা নদী। তার পর ক্রমান্বয়ে ফুটে উঠেছে পঞ্চাশের কলকাতা ও শহরতলি, কো-এডুকেশন কলেজ, ছাত্ৰ-আন্দোলন ও রাজনৈতিক পটভূমি, সর্বভারতীয় কর্মজীবনের পরিবেশ ও প্রতিকূলতার জীবন্ত চিত্রাবলি। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাঙালি মেয়েদের সাধ, সংকল্প ও সংগ্রামের এক জীবন্ত ছবি ‘সাতকাহন’।
প্রিয় লেখকের কথা বলতে এক বার সমরেশ মজুমদার বলেছিলেন, তিনি প্রথমত রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কিছু লিখতে বা ভাবতে পারতেন না। প্রিয় কবি ও লেখকের ১৬২তম জন্মদিনের ঠিক আগের সন্ধেতেই চিরকালের মতো কলম নামিয়ে রাখলেন তিনি।
সংগ্রহ।
RIP