নতুন করে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দায় যখন প্রথম ক্লাস শুরু হয়, সেটা ছিল উচ্চশিক্ষার ইতিহাসে এক দারুণ মুহূর্ত। ঘটনাটি সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল, এমনকী ইতালিরও। ইতালির বোলোনিয়ায় রয়েছে ১০৮৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন জন্মায়, পঞ্চম শতাব্দীর গোড়ায় নির্মিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে তত দিনে ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হাজার হাজার ছাত্রের পঠনপাঠন সম্পন্ন হয়েছে। ইতালির সর্বাধিক বিক্রিত সংবাদপত্র কোরিয়ের দেল্লা সেরা অনেক প্রাচীনতর এই ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনরুজ্জীবন প্রসঙ্গে এক দারুণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, যার শিরোনাম ছিল ‘রিতোনো আ নালান্দা'।
এটা যদি বিশ্বে অধ্যয়ন-বিষয়ক আনন্দ উদযাপনের এক উপলক্ষ হয়ে থাকে, তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমার পক্ষে এটা ছিল এক গভীর স্মৃতি জাগিয়ে তোলা মুহূর্তও। আমি ফিরে গিয়েছিলাম প্রায় ৭০ বছর আগে সেই মুহূর্তটিতে যখন, এক অনুভূতিসম্পন্ন শিশু হিসেবে, আমি প্রাচীন নালন্দার ধ্বংসস্তূপের দিকে সশ্রদ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিলাম আর অবাক হয়ে ভেবেছিলাম, এই বিশ্ববিদ্যালয় কি আবার কোনও দিন জীবন ফিরে পেতে পারে। আমি আমার দাদামশাই, পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এটা কি চিরদিনের মতো হারিয়ে গেছে? তিনি ছিলেন আমার ইতিহাসের প্রথম শিক্ষাদাতা এবং আমার সংস্কৃত শিক্ষকও বটে। “হয়তো নয়”, বলেছিলেন বৃদ্ধ মানুষটি, যিনি সর্বদাই আশাবাদের সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করতেন, “এই প্রতিষ্ঠান আজ আমাদের পক্ষে খুব শুভ হতে পারে।”
আপনিও পড়ুয়া'য় লিখুন। আমাদের কাছে লেখা পাঠাবার ঠিকানা editor@porua.net
প্রাচীন নালন্দা
দেড় হাজার বছরের বেশি আগে যখন নালন্দায় ক্লাস নেওয়া হত, সেটা ছিল বিশ্বে উচ্চশিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। সেখানে এমন ধরনের শিক্ষা দেওয়া হত যা আমরা সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থেকে এখন আশা করি। নতুন জ্ঞানের জগৎ উন্মুক্ত করে নালন্দা নিজেকে এক স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল, যেখানে বহু বিষয়ে খুবই অগ্রবর্তী শিক্ষা দেওয়া হত। ধীরে ধীরে সে যা হয়ে উঠেছিল, আমরা আজ তাকে বলি বিশ্ববিদ্যালয়। সে কেবল সারা ভারতবর্ষ থেকেই ছাত্রদের আকর্ষণ করেনি, বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে যুক্ত চিন, জাপান, কোরিয়া ও অন্যান্য এশীয় দেশগুলি থেকেও ছাত্রদের টেনে এনেছিল। সপ্তম শতাব্দী নাগাদ এখানে দশ হাজার আবাসিক ছাত্র ছিল। নালন্দায় কেবল বৌদ্ধশাস্ত্রেরই পাঠ দেওয়া হত না, পড়ানো হত অন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক বিষয়ও। পাঠ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল সাহিত্য ও ভাষাতত্ত্ব, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও মহাকাশবিদ্যা, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য এবং চিকিৎসাবিদ্যা ও জনস্বাস্থ্য। কেবল ভারত নয়, সারা বিশ্বেরই এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের
Keep reading with a 7-day free trial
Subscribe to